প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হওয়ার নিয়ম
আপনি যদি প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হতে চান, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট একাউন্ট খুলে বেশ লাভবান ব্যবসা করতে পারবেন। এই পোস্টে কীভাবে এজেন্ট হবেন ও এজেন্ট হলে কি কি সুবিধা পাবেন এ সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পারবেন।
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট কি?
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে জানতে হবে প্রবাসীর ট্যাক্সি সম্পর্কে। মূলত ঢাকা বিমানবন্দর থেকে এতদিন গাড়ি নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ ছিলো প্রবাসীদের। অপরিচিত গাড়িতে উঠে মাঝপথে যেয়ে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারানো এমনকি অনেকের জীবন পর্যন্ত দিতে হয়েছে! আবার আকাশচুম্বী ভাড়া, সেইসাথে ভোগান্তি ছিলো নিত্যদিনের সঙ্গী। এমতাবস্থায় প্রবাসীদের শতভাগ নিরাপত্তার সাথে এবং দেশের সর্বনিম্ন ভাড়ায় মর্যাদাপূর্ণ গাড়ি সেবা চালু করে প্রবাসীর ট্যাক্সি লিমিটেড। যে প্রতিষ্ঠানের মালিক, চালক এবং যাত্রী সকলেই প্রবাসী। এটি একমাত্র প্রবাসীদের জন্য দেশের বিশেষায়িত গাড়ি সেবা প্রতিষ্ঠান। গত ১৮ ডিসেম্বর-২০২১ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে এর যাত্রা শুরু করে। প্রথম মাসেই যাত্রী সেবা দিয়ে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে প্রবাসীর ট্যাক্সি। আমাদের রয়েছে সরকারি অনুমোদন। এছাড়াও রয়েছে
** অত্যাধুনিক গাড়ী
** বিদেশ ফেরত দক্ষ চালক
** আন্তর্জাতিকমানের যাত্রীসেবা।
ইতিমধ্যেই দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম প্রথম আলো থেকে শুরু করে অধিকাংশ মিডিয়াতে প্রবাসীর ট্যাক্সির সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। এমতাবস্থায় প্রবাসীদের দোরগোড়ায় প্রবাসীর ট্যাক্সির সেবা পৌঁছে দিতে আমরা প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার মাধ্যমে একজন প্রবাসী বিদেশে তার নিজ কর্মের পাশাপাশি শতভাগ বৈধ এবং হালালভাবে অতিরিক্ত উপার্জন করতে পারবেন। এতে কোনো ধরণের বিনিয়োগ না করেও মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারবেন একজন এজেন্ট।
এজেন্ট এর কাজ কি?
অনলাইনের মাধ্যমে প্রবাসীর ট্যাক্সির গাড়ি বুকিং দিয়ে যাত্রীকে বুকিং টিকিট দেওয়া এবং বিমানবন্দরে নেমে কোনো ভোগান্তি ছাড়া-ই কিভাবে আমাদের গাড়ি খুঁজে পাবেন তা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং যাত্রীদের মেম্বারশিপ কার্ড করে দেওয়া।
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হতে কি কি লাগে?
প্রবাসীর ট্যাক্সির ওয়েবসাইট থেকে ঘরে বসে অনলাইনে গাড়ি বুকিং করা গেলেও এজেন্ট একাউন্ট ঘরে বসে খোলা যায়না। এজেন্ট একাউন্ট খুলতে প্রবাসীর ট্যাক্সির ব্রান্ড এম্বাসেডরের সত্যায়িত করা আবেদন কপি প্রবাসীর ট্যাক্সির হেড অফিসে পাঠানো লাগবে। এর জন্য আগ্রহীরা প্রবাসীর ট্যাক্সির এডমিন নাম্বারে (+8801823 384258) হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। প্রতিটি দেশে প্রবাসীর ট্যাক্সির নিজস্ব ব্রান্ড এম্বাসেডর রয়েছে। যাদের বিস্তারিত তথ্য প্রবাসীর ট্যাক্সির ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে।
এজেন্ট হওয়ার যোগ্যতা- প্রবাস
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হওয়ার সর্বপ্রথম শর্ত বিদেশ অবস্থানরতদের জন্য:
১, প্রবাসী হতে হবে।
২, বিদেশে কমপক্ষে ৫ বছর থাকতে হবে।
৩, কমিউনিটির সাথে পরিচিতি থাকতে হবে।
৪, সোশ্যাল এক্টিভিস্ট হলে অগ্রাধিকার পাবে।
৫, বৈধ রেসিডেন্স কার্ড, পাসপোর্ট থাকতে হবে।
৬, বাংলাদেশের (পরিবারের) এবং বিদেশের (নিজের) দুইটি মোবাইল নাম্বার লাগবে। বিদেশের নাম্বারে অবশ্যই হোয়াটসঅ্যাপ চালু থাকতে হবে।
৭, ফেসবুক আইডি লাগবে।
৮, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে বুকিং করতে পারবে এমন ধারণা থাকতে হবে।
৯, আবেদন করতে পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবির প্রয়োজন হবে।
এজেন্ট হওয়ার যোগ্যতা- প্রবাস ফেরত
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হওয়ার সর্বপ্রথম শর্ত বিদেশফেরত প্রবাসীদের জন্য:
১, দেশে নিজের নামে যে কোনো বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।
২, নিজের নামে ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
৩, কমিউনিটির সাথে পরিচিতি থাকতে হবে।
৪, সোশ্যাল এক্টিভিস্ট হলে অগ্রাধিকার পাবে।
৫, বিদেশ ফেরত এমন ডকুমেন্টস থাকতে হবে।
৬, পরিবারের এবং নিজের হোয়াটসঅ্যাপ চালু এমন দুইটি মোবাইল নাম্বার থাকতে হবে।
৭, ফেসবুক আইডি লাগবে।
৮, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে বুকিং করতে পারবে এমন ধারণা থাকতে হবে।
৯, আবেদন করতে পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবির প্রয়োজন হবে।
এজেন্ট আইডি-
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হওয়ার পর কোম্পানি থেকে আইডি পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। যার মাধ্যমে এজেন্ট তার সকল লেনদেন এবং বুকিং কার্যক্রম করতে পারবেন। মাসে কতটি বুকিং হলো এবং কত টাকা কমিশন ইত্যাদি সকল তথ্য পাওয়া যাবে এজেন্ট প্যানেলে।
উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হতে আরো কিছু প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে হবে, এগুলো হলো:
১, কোনো ভাবেই প্রবাসীদেরকে মিথ্যা প্রলোভন দেওয়া যাবেনা।
২, প্রবাসীর ট্যাক্সির সেবার মধ্যে নেই, এমন কোনো সেবার বিষয়ে যাত্রীকে বলা যাবেনা।
৩, নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা নেওয়া যাবেনা।
৪, লেনদেনে স্বচ্ছতা থাকতে হবে।
৫, ব্রান্ড এম্বাসেডরের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।
???? প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট হতে চাইলে আবেদন করতে পারবেন প্রবাসীর ট্যাক্সির ওয়েবসাইটে যেয়ে এজেন্ট অপশনের মাধ্যমে। অনলাইনে এজেন্ট একাউন্ট খুলতে চাইলে এই লিংকে প্রবেশ করুন। এরপর একটি ফর্ম দেখতে পাবেন যা পূরণ করার মাধ্যমে প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট একাউন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। অনলাইন ফরমে যেসব তথ্য দিতে হবে-
১, যিনি এজেন্ট হতে চান তার নাম লিখুন।
২, রেসিডেন্স আইডি নাম্বার/জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট আইডি/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স এর নাম্বার প্রদান করুন।
৩, দেশ থেকে আবেদন করলে ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার লিখুন, প্রবাসী হলে স্কিপ করুন।
৪, যোগাযোগ নম্বর অর্থাৎ বিদেশে যেখানে অবস্থান করছেন সেখানের ঠিকানা এবং ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার দিন।
৫, প্রবাস ফেরত হলে “ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নাম” বক্সে আপনার দোকানের নাম দিন।
৬, “ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা” বক্সে দোকানের ঠিকানা লিখুন।
৭, যে দেশ থেকে আব্দেওন করছেন সেই দেশের নাম লিখুন।
৮, এম্বাসেডর ঘরে আপনার এম্বাসেডরের নাম সিলেক্ট করুন।
ফর্ম পূরণ শেষে ভালোভাবে প্রদত্ত তথ্য যাচাই করুন ও “জমা দিন” বাটনে ক্লিক করে ফর্ম সাবমিট করুন। ফর্ম সাবমিট করার কিছুদিনের মধ্যে প্রবাসীর ট্যাক্সির প্রতিনিধি আপনার সাথে যোগাযোগ করে এজেন্ট একাউন্ট চালু করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সাহায্য করবেন।
এজেন্ট কমিশন
একজন প্রবাসীর ট্যাক্সির এজেন্ট এর মূল আয় আসে কমিশন থেকে। প্রতিটি গাড়ি বুকিং থেকে ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয় এজেন্ট দের। অদাহরন স্বরূপ- ঢাকা বিমানবন্দর থেকে একজন যাত্রী গাড়ি বুকিং করলো বরিশাল এর জন্য এবং তার ভাড়া হলো ১০ হাজার টাকা। এই ভাড়ার ১০ % কমিশন হলে এজেন্ট পাবেন ১ হাজার টাকা। আর যদি ৫% কমিশন হয়, তাহলে এজেন্ট পাবেন ৫০০ টাকা। এভাবে দৈনিক যত বুকিং হবে মাস শেষে এজেন্ট এর একাউন্টে সেই পরিমাণ টাকা জমা হবে। মনে রাখবেন একজন এজেন্ট এর কমিশন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়, তাই এই বিষয়ে এম্বাসেডর বা এজেন্ট প্যানেলের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন